
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হোয়াটসআপে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজকে ঘুষের প্রস্তাব দিয়েছেন একজন কর্মকর্তা। এমন অভিনব প্রস্তাব দেওয়ায় সংস্থাটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।মিজানুর রহমান সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপে ডিএনসিসির প্রশাসককে উপকর কর্মকর্তা পদে পদায়ন করার জন্য এ ঘুষের প্রস্তাব করেন। সরাসরি ঘুষ প্রস্তাব করায় প্রশাসক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।অবশ্য মিজানুর রহমান বলেন, ‘ঘুষের এ বিষয়টি আমার জানা নেই। আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, কিন্তু কেন করা হয়েছে আমার সঠিক জানা নেই।’ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কয়েকজন কর্মচারীকে উপ-কর কর্মকর্তা পদে পদায়ন করা হয়। মূলত উপ-কর কর্মকর্তা পদটি নবম গ্রেডের। কিন্তু এসব পদে ১৬-১৪ গ্রেডের কর্মচারীদেরও পদায়ন করা হয়েছে। মিজানুর রহমানও এ পদের জন্য আগ্রহী ছিলেন। উপ-কর কর্মকর্তা পদটি অনেকটা আকর্ষণীয় হওয়ায় অনেকে এখানে আসতে তদবির করেন, যা অনেকটা প্রকাশ্য। সম্প্রতি এই পদে আসার আগ্রহের কথা জানিয়ে মিজানুর রহমান সরাসরি উত্তর সিটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজকে হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদেবার্তা পাঠান।
মিজানুর রহমান প্রশাসককে লেখেন, ‘ডি টি ও (পৌরকর) এর নিজ বেতন ভাতায় দায়িত্ব নিতে চাই। স্যার যদি সম্ভব না হয় তাহলে ডি টি ও (পৌরকার) এর অতিরিক্ত দায়িত্ব নিতে চাই। স্যার আমি মিজানুর রহমান আমার বর্তমান পদবি: প্রশাসনিক কর্মকর্তা অঞ্চল ১ (উত্তরা), ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। স্যার কাজটি করে দিলে আপনি চির কৃতজ্ঞ থাকব এবং আপনার জন্য এক লক্ষ টাকার উপহার আছে আমার পক্ষ থেকে। স্যার রাজি থাকলে এক লক্ষ টাকাও দিতে পারি কেউ জানবে না। স্যার কিছু মনে করবেন না। শ্রদ্ধান্তে আপনার বাধ্যগত মিজানুর রহমান।’পরে এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেন প্রশাসক। সে অনুযায়ী ৮ সেপ্টেম্বর প্রশাসনিক কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে বরখাস্ত করা হয় বলে উত্তর সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে।
এ সংক্রান্ত এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, অঞ্চল-১, প্রশাসন শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিজ দায়িত্বসহ সহকারী হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা, অঞ্চল-১, ৬, ৭ ও ৮ (অ: দা:) মিজানুর রহমানকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কর্মচারী চাকরি বিধিমালা ২০১৯ এর ৪৯ এর (ক), (খ), (ঘ), (ঙ) ও (চ) উপ-বিধি মোতাবেক দায়িত্ব পালনে অবহেলা, অসাধাচরণ, অদক্ষতা, দুর্নীতি বা প্রতারণায় জড়ানোর অভিযোগে বিভাগীয় মামলা রুজু পূর্বক একই বিধিমালা এর ৫৫ (১) উপ-বিধি মোতাবেক চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
বরখাস্তকালীন বিধি মোতাবেক মিজানুর রহমান খোরাকিভাতা প্রাপ্য হবেন। অবশ্য এই ঘটনা ঘটিয়ে পরবর্তীতে মিজানুর রহমান প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে ক্ষমা চেয়েছেন বলে জানা গেছে।