
অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্ট আব্দুল আউয়াল অভিযোগ করেছেন, ময়মনসিংহের বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ.কে.এম ছিফাতুল্লাহ ও তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রা প্রতারণা, মামলা বাণিজ্য এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তার পরিবারকে নিঃস্ব করেছেন। শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর–রুনী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ তুলে ধরেন।
প্রতারণার অভিযোগ
আব্দুল আউয়াল জানান, সেনাবাহিনীতে দীর্ঘ ২৬ বছর চাকরি শেষে অবসর নেয়ার পর তার ছেলে আশরাফুল ইমরান হৃদয়ের সঙ্গে বিচারক ছিফাতুল্লাহর পরিচয় ঘটে মাজহারুল ইসলাম তুষারের মাধ্যমে। নিলামের মালামাল সরবরাহের প্রলোভন দেখিয়ে বিচারক তার ছেলের কাছ থেকে একাধিক চেক, স্ট্যাম্প ও প্রায় ১৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা নেন। কিন্তু পরবর্তীতে টাকা ফেরত না দিয়ে তার ছেলে ও পরিবারের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়।
মামলা বাণিজ্য
অভিযোগে বলা হয়, সি.আর মামলা নং–৪৫৩/২৪, ৫৭৯/২৪, ৭০৬/২৪, ৪৯(১)/২৫ ও ৫৭৮/২৪–এই পাঁচটি মামলায় প্রায় ৭৭ লাখ টাকার দাবি করা হয়েছে। এসব মামলার বাদী ও সাক্ষী হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছেন বিচারকের মা, শশুর-শাশুড়ি, শ্যালক, খালা শ্বশুর-শাশুড়ি, নানা শ্বশুর, এমনকি তার অফিস সহায়ক ফরিদ উদ্দিন ও নিকটাত্মীয়রা।
স্থানীয় গণ্যমান্যদের মধ্যস্থতায় একাধিকবার আপোষ হলেও পরবর্তীতে নতুন করে মামলা করা হয়েছে বলে দাবি করেন আব্দুল আউয়াল। এমনকি জামিন নামঞ্জুর হওয়ার পর তার ছেলেকে কারাগারে এনে রাজনৈতিক মামলায় জড়ানোর হুমকিও দেওয়া হয়।
জন্মতারিখ নিয়ে প্রশ্ন
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিচারক ছিফাতুল্লাহ ভুয়া জন্মতারিখ ব্যবহার করে চাকরিতে প্রবেশ করেছেন। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার জন্ম ২ জানুয়ারি ১৯৯৩, অথচ বড় ভাই নূর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর জন্ম ১৭ জুলাই ১৯৯২। মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবধানে দুই ভাইয়ের জন্ম সম্ভব নয় বলে তিনি প্রশ্ন তোলেন।
“বিচারকের আসন থেকে প্রতারণা”
আবেগঘন কণ্ঠে আব্দুল আউয়াল বলেন
“বিচারকের আসনে বসে প্রতারণা ও মামলা বাণিজ্য কোনোভাবেই ন্যায়বিচারের মর্যাদা রক্ষা করে না। তিনি শুধু আমার পরিবারকেই নয়, আরও অনেক সাধারণ মানুষকে প্রতারণার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। আজ আমি পথে বসেছি।”
তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, বিচার এবং অভিযুক্ত বিচারককে বিচার বিভাগ থেকে অপসারণের দাবি জানান।